জয়শঙ্কর বলেন, আফ্রিকার সাথে প্রতিরক্ষা এবং সুরক্ষা সহযোগিতা খাতে ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্রতার ইতিহাস রয়েছে।

আফ্রিকায় পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী (ক্লিন এনার্জি) স্থাপন এবং সম্প্রসারণের ব্যাপারে ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার, ভারত এবং আফ্রিকার মধ্যকার ১৬ তম সিআইআই-এক্সিম ব্যাংক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ অঙ্গীকার করেন তিনি।



তিনি আরও জানান, “আফ্রিকার দেশগুলো বর্তমানে আন্তর্জাতিক সৌর জোটের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে।…বিদ্যুৎ, জল কিংবা কৃষি, সব ক্ষেত্রেই ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব আফ্রিকাকে আরও রঙিন করে তুলতে সহায়তা করবে। সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বৃদ্ধিকল্পে আমাদেরকে একত্রে কাজ করতে হবে।”



এসময় ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আফ্রিকার সাথে প্রতিরক্ষা এবং সুরক্ষা সহযোগিতা খাতে ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্রতার ইতিহাস রয়েছে। সমসাময়িক বাস্তবতায় এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্পর্কও প্রতিনিয়ত আপডেট করা হচ্ছে।”



নিজের বক্তব্যে, ২০১৪ সাল থেকেই আফ্রিকার উন্নয়নে ভারতের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বিষয়টি তুলে ধরেন মন্ত্রী। এসময় বিভিন্ন উদাহরণ টেনে আফ্রিকার সঙ্গে সামুদ্রিক সুরক্ষা এবং সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতি আগ্রহ দেখান জয়শঙ্কর।



জয়শঙ্কর আরও বলেন, “ভারত আফ্রিকার সঙ্গে অংশীদারিত্বকে সবসময়ই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। বিগত ১৫ টি সিআইআই-এক্সিম ব্যাংক সম্মেলনে এই সম্পর্ক গভীরতর হয়েছে। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি দু পক্ষের নেটওয়ার্কিংকে উৎসাহিত করেছে। আফ্রিকায় ভারতের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিতেই এর দৃশ্যমান সাফল্য বিদ্যমান। করোনা মহামারী থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে এই অংশীদারিত্ব আরও ব্যাপক ভাবে কাজে আসবে।”



এসময়, করোনা পরবর্তী সময়ে ভারত এবং আফ্রিকার মধ্যে চারটি বিষয়ে সেতুবন্ধন তৈরীর সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “জনস্বাস্থ্য, ডিজিটাল প্রযুক্তি, দক্ষতা বৃদ্ধি কার্যক্রম এবং সবুজ অর্থনীতি বাস্তবায়নে ওতপ্রোতভাবে কাজ করতে পারে ভারত এবং আফ্রিকা।”



আফ্রিকা অঞ্চলেও করোনা মহামারীর কারণে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এক নতুন চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ভারত সবাইকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চায়নে বিশ্বাস করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান হেলথ’ দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের অব্যহত প্রতিশ্রুতির বিষয়টিই তুলে ধরে।”



পাশাপাশি, ডিজিটাল বিশ্ব গড়তেও ভারতের উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “আফ্রিকায় প্রায় ১৭ টি দেশে ভারতের সহায়তায় ইতোমধ্যে টেলি শিক্ষা ই-বিদ্যা এবং টেলি মেডিসিন ই-স্বাস্থ্য ভারতী চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষাবৃত্তি সহ নানান ধরণের সেবা চালু রয়েছে অত্র অঞ্চলের জন্যে।”



নিজ বক্তব্যের শেষ ধাপে এসে জয়শঙ্কর বলেন, মানব উতকর্ষ সাধনে ভারতের এই বিনিয়োগগুলো আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নে এবং অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।