সমুদ্র নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের কাছ থেকে সাহায্য চায় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ।

প্রথমবারের মতো জাতীয় ডেপুটি নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ে বৈঠক করেছে ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ। গত ০৪ আগস্ট, বুধবার, কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের আদলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীলঙ্কা আয়োজিত এই বৈঠকে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলো বাংলাদেশ, মরিশাস এবং সেশেলস।

জাতীয় ডেপুটি নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের এই বৈঠকে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের অধীনে সহযোগীতার মূল চারটি ক্ষেত্র নির্ধারণ করেছে সদস্য দেশগুলো। সেগুলো যথাক্রমেঃ সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও মৌলবাদ নিয়ন্ত্রণ, পাচার এবং সংগঠিত অপরাধ দমন এবং সাইবার নিরাপত্তা।


এসব সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নিয়মিত আলোচনা, যৌথ অনুশীলন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সহ নানাবিধ সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। অংশগ্রহণকারী সকল সদস্য রাষ্ট্রই সমসাময়িক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহযোগিতা ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। তাই আঞ্চলিক এই সহযোগিতার মনোভাব সমুন্নত রেখে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা।


সর্বশেষ গত ২০২০ সালের নভেম্বরে উক্ত দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে মেরিটাইম সিকিউরিটি বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। কলম্বোয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় এর নামকরণ করা হয় 'কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ'। সেখানে একটি সচিবালয়ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা কাঠামোর ধারণা ২০১১ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠা পায়।

এই সহযোগিতা কাঠামোর অন্যতম প্রধান কাজগুলো হচ্ছে, সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র ও মানব পাচার সহ আন্তর্জাতিক অপরাধ রোধ, এইচএডিআর, সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি।


বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সকল সদস্য রাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের নিয়মিত যৌথ মহড়া আয়োজনের কথাও অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এক পর্যায়ে সমুদ্র নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের কাছ থেকে সাহায্য চায় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। ভারত তাদেরকে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাসও প্রদান করে।

আলোচনাকালে সম্প্রতি কলম্বোর উপকূলে হওয়া এমভি এক্সপ্রেস পার্লে অগ্নিকাণ্ড এবং ফলস্বরুপ পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনাটিও স্থান পায়। তাছাড়া, সন্ত্রাসবাদ এবং মৌলবাদ মোকাবেলায় সহযোগিতার গুরুত্ব নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করে দেশগুলো।

চলতি বছরের শেষদিকে মালদ্বীপে পরবর্তী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তিন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র -বাংলাদেশ, সেশেলস এবং মরিশাসকে সেখানে পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে যুক্ত থাকার আহবান জানানো হয়েছে।

বৈঠকে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিত্ব করেন সেদেশের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল এলএইচএসসি সিলভা, ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি এনএসএ পঙ্কজ সরন, মালদ্বীপের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব আইশথ নওশিন ওয়াহেদ, বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপালস স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার উজ জামান, মরিশাসের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের স্থায়ী সচিব পুষমাওয়াতি সোহুন এবং সেশেলসের প্রতিনিধিত্ব করেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান কর্নেল মাইকেল রোজেট।