করোনা মহামারীতে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকার যেভাবে সঙ্কট মোকাবেলা করেছে, তার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন জয়শঙ্কর।

করোনা পরবর্তী সময়কালে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অব্যহত রাখা এবং দেশের সার্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল সমুন্নত রাখতে সার্বজনীন উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

১২ আগস্ট, বৃহস্পতিবার, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) -এর বার্ষিক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। শিল্পপতিদের সঙ্গে আলোচনাকালে জয়শঙ্কর বলেন, “বিগত ১০০ বছর সময়কালে করোনা আমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত। সর্বশেষ যখন স্প্যানিশ ফ্লু হয়েছিলো, নিঃসন্দেহে আমাদের মধ্যে কেউ তা দেখেননি। কেননা প্রায় ১০০ বছর পূর্বে তা চাক্ষুস করেছিলো পৃথিবী।”

মন্ত্রী আরও বলেন, “প্রথমদিকে গোটা পৃথিবী হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলো এবং ভাবছিলো কীভাবে এই তীব্র সঙ্কট মোকাবেলা সম্ভব! … আজ আমরা যে অবস্থানে রয়েছি, আমি মনে করি এর মাধ্যমে আমাদের জাতীয় সংকল্পের প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে। আমরা যেভাবে এই ভয়াবহ সময় মোকাবেলা করেছি, তা নিঃসন্দেহে গোটা পৃথিবী বুঝতে পারবে এবং প্রশংসা করবে। আমরা অগ্নি পরীক্ষা অতিক্রম করে এসেছি।”

সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করে জয়শঙ্কর বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই জেনে থাকবে, করোনা আমাদেরকে গ্রাস করার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রী এবং গোটা সরকার স্বাস্থ্য ইস্যুতে সরব হয়ে উঠে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপর ফোকাস করে। যার অন্যতম উদাহরণ ‘আয়ুস্মান ভারত’ উদ্যোগ।”


এসময় সিআইআই এর সঙ্গে করোনা মহামারীর কারণে ঘটে যাওয়া ক্ষতির যোগসূত্র উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি এখন যা বলবো, তা সরাসরি সিআইআই এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। করোনা সত্যিই আমাদের মৌলিক উৎপাদন কমিয়ে এনেছে এবং দেশের সক্ষমতার অভাব প্রকাশ করেছে।”

এসময় ভেন্টিলেটর সঙ্কট, অক্সিজেন সঙ্কট সহ নানাবিধ সমস্যার কথাও স্মরণ করেন জয়শঙ্কর। পাশাপাশি বর্তমান বিশ্ব পরিক্রমায় ভারতের ভাবমূর্তির সঙ্গে এসব সঙ্কট থাকা মানায় না বলে অভিমত দেন তিনি। তাই সার্বিকভাবে উৎপাদন, সাপ্লাই চেইন পূর্বের মতো সমুন্নতকরণ সহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় সকল বিষয়ে আরও মনযোগী হওয়ার আহবান জানান তিনি।

তবে করোনায় ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সার্বিকভাবে ভারতের নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেনা বলেই বিশ্বাস জয়শঙ্করের। মহামারী মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ এবং জনগণের সচেতনতা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে ভারতের ইতিবাচক এক প্রতিচ্ছবিও বিশ্বের সামনে তুলে এনেছে বলে মনে করেন তিনি।

পাশাপাশি করোনাকালে ভারত কর্তৃক তৈরী করা কোভ্যাক্সিন টিকা কিংবা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন দুঃস্থ গরীব মানুষের একাউন্টে সরাসরি সহায়তার অর্থ প্রেরণের উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। সার্বিকভাবে ভারতের শিল্পপতি সমাজকে ভারতের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার বার্তা দেন তিনি।