২০১৪ সালে ইয়েমেনে শুরু হওয়া দীর্ঘ সংঘাতের কারণে গত ছয় বছর যাবত বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাঙ্কারটিতে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি।

ভারত ইয়েমেনের হোদাইদাহ বন্দরের উত্তরে নোঙ্গর করা ‘সেফার’ (SAFER) ট্যাঙ্কারকে ঘিরে রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত সমস্যা গুলোর দ্রুত সমাধানের আহবান জানিয়েছে। পাশাপাশি ইয়েমেনে কর্তব্য পালনরত জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলকে ট্যাঙ্কারটিতে জরুরি প্রবেশাধিকার দেয়ার বিষয়েও সরব হতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় কূটনীতিকদের।

গত সোমবার, ২৩ আগস্ট, নিরাপত্তা পরিষদের এক আলোচনায় এসব কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি।

উল্লেখ্য, ‘সেফার’ (SAFER) হচ্ছে একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড অফলোডিং (FSO) তেলবাহী জাহাজ যেখানে ১,৪০,০০০ টন তেল মজুদ রয়েছে। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে শুরু হওয়া দীর্ঘ সংঘাতের কারণে গত ছয় বছর যাবত বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাঙ্কারটিতে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। ফলে বর্তমানে আশপাশের জলপথে তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তিরুমূর্তি আরও বলেন, “ইয়েমেনের মারিব প্রদেশে সরকার এবং হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যকার সংঘাত বৃদ্ধির কারণে দেশটির অন্যান্য প্রদেশেও হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে।” এমতাবস্থায় সমস্ত পক্ষকে সামরিক সংঘাত এড়ানোর আহবান জানান তিনি। এজন্য, রিয়াদ এবং স্টকহোম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এই কূটনীতিক।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘন্টায় উক্ত সংঘাতে ইয়েমেনের জাতীয় বাহিনী এবং হুতি বিদ্রোহীদের যুদ্ধে কমপক্ষে ৬২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। তিরুমূর্তি বলেন, “ইয়েমেনে মানবিক পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। সেখানে মানবিক সহায়তার জন্য নিয়মিত এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে পর্যাপ্ত তহবিলের প্রয়োজন রয়েছে।”

এছাড়াও, এডেন উপকূলে সাম্প্রতিক তেল ট্যাঙ্কার ‘ডিআইএ’ দ্বারা সৃষ্ট তেল ছড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিরুমূর্তি। এই উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “ইয়েমেনে কর্তব্য পালনরত জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলকে ‘সেফার’ ট্যাঙ্কারটিতে জরুরি প্রবেশাধিকার দিতে সরব হোন।”

একই সঙ্গে, ভারত সবসময়ই ইয়েমেনের ঐক্য, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রাখে বলেও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। তাই দেশটিতে সকল ধরণের সংঘাত এড়ানোর জোরালো আহবান জানান তিনি।