জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফুমিও কিশিদা দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো তাঁর সঙ্গে ফোনালাপ করলেন নরেন্দ্র মোদী।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে টেলিফোন বৈঠক করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ০৮ অক্টোবর, শুক্রবার, উক্ত কথোপকথনটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাকালে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ায় কিশিদাকে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জ্ঞাপন করেন মোদী। এছাড়াও, কোয়াড ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা ইস্যুতে মতবিনিময় করেন দুজন।

পরবর্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে মতবিনিময় করেন মোদী ও কিশিদা। এসময় কৌশলগত সম্পর্ক ও পারস্পরিক অংশীদারিত্বের দ্রুত অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন উভয় পক্ষ। পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তি ও ভবিষ্যতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে নানা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তাঁরা।

এসময়, জাপানী কোম্পানীগুলোকে ভারতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সংস্কারে অবদান রাখার পাশাপাশি বৃহৎ পরিসরে লাভবান হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। একই সঙ্গে, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের সংস্কারে একত্রে কাজ করার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন দুজনে।

আলোচনাকালে উভয় নেতার মাঝে কোয়াড ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এসময়, কিশিদাকে শীঘ্রই ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান মোদী।

ইতোপূর্বে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কিশিদার নির্বাচিত হওয়ার পরও অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মোদী। সেসময় এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, “জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা। ভারত ও জাপানের মধ্যকার কৌশলগত দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে এবং সর্বত্র শান্তি ও সমৃদ্ধির বাণী এগিয়ে নিতে আপনার সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ হয়ে আছি।”

পাশাপাশি ভারত এবং জাপানের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান জানিয়ে মোদী আগত দিনগুলোতে জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, গত ০৪ অক্টোবর, সোমবার, জাপানের পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে ভোটে জিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হোন ফুমিও কিশিদা। দেশটির সদ্য প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিশিদা মতৈক্যের ভিত্তিতে চলা পছন্দ করেন।

পূর্বেই জানা গিয়েছিলো, জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি কিশিদাকেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে। তারপরও পার্লামেন্টে আস্থাভোট জিততে হতো তাঁকে। তবে পর্লামেন্টে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদে বসা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ছিলো।

প্রসঙ্গত, জাপানের একশোতম প্রধানমন্ত্রী কিশিদা। তিনি সুগার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। সুগা আসন্ন ভোটে দলকে নেতৃত্ব দিতে চাননি। করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সুগার জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছিলো।

জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশটির জনগণের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা হলো, করোনাকালে চাপের মধ্যে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরানো। কিশিদা জানিয়েছেন, তিনি আর্থিক সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাবেন। চলতি বছরের শেষে ৩০ ট্রিলিয়ন ইয়েনের একটি বিশেষ প্যাকেজও ঘোষণা করবেন তিনি। এই প্যাকেজের ফলে জাপানের অর্থনীতি আবার চাঙ্গা হবে বলে তাঁর আশা।

কিশিদা নিজেও ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, নিও-লিবারালিসম থেকে সরে নিউ জাপানি ক্যাপিটালিজমের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে চান তিনি এবং কর ব্যবস্থার সংস্কার করে তিনি মানুষের হাতে আরও অর্থ তুলে দিতে চান।