২০২২ সালের আগস্টে দেশীয় বিমানবাহী রণতরী-১ (আইএসি-১)-এর প্ল্যাটফর্ম হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে আইএনএস বিক্রান্ত।

বার পালা তৃতীয় ট্রায়ালের। প্রথম দুই ট্রায়ালের সাফল্যের পর তৃতীয়বার ট্রায়ালের জন্য তৈরি ভারতের প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধ বিমানবাহী রণতরী আইএসি বিক্রান্ত। ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে সমুদ্র ট্রায়ালের তৃতীয় পর্বের জন্য আইএসি বিক্রান্ত তৈরি। এই রণতরী যুদ্ধকালীন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে পারফর্ম করে তার পরীক্ষা চালানো হবে।

গত বছরের অগাষ্টে আইএসি বিক্রান্তের প্রথম সামুদ্রিক ট্রায়াল ছিল প্রপালশন, নেভিগেশনাল স্যুট এবং মৌলিক অপারেশনের জন্য। ২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে দ্বিতীয় সমুদ্র ট্রায়ালে জাহাজটিকে মেশিনারী পরীক্ষা এবং ফ্লাইট ট্রায়ালের রাখা হয়েছিল। আইএএস বিক্রান্ত আত্ননির্ভর ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে প্রথম পদক্ষেপ। এই রণতরীটি সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের কথায় দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি এটি সবথেকে জটিল যুদ্ধ জাহাজ।

আইএসি বিক্রান্ত এখন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে পারফর্ম করে তা দেখবেন নেভাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিকাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা। বিশাখাপত্তনমে অবস্থিত ডিআরডিও একটি ল্যাবরেটরি হল নেভাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিকাল ল্যাবরেটরি। এছাড়া জাহাজের বিভিন্ন সেন্সর স্যুটও পরীক্ষা করা হবে। ২০২২ সালের অগাষ্ট মাসে এটি ব্যবহারের জন্য চূড়ান্ত করা হবে।

বিশ্বের মধ্যে ছটি দেশের নিজস্ব এয়ারক্রাফ্ট কেরিয়ার ডিজাইন করার ও নির্মাণের ক্ষমতা রয়েছে। সেগুলো হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ইতালি ও চীন। এবার এদের তালিকায় যুক্ত হল ভারতও। আইএসি বিক্রান্ত লম্বায় ২৬২ মিটার। এটির প্রস্থ ৬২ মিটার। সুপার স্ট্রাকটারসহ এটি উচ্চতায় ৫৯ মিটার। এটিতে ১৪টি ডোক রয়েছে। যার মধ্যে পাঁচটি সুপারস্ট্রাকটার। এই জাহাজ ১৭শ জন যাত্রী ও ক্রু মেম্বারদের জন্য ২৩০০ টি বগি রয়েছে। পুরুষ ও মহিলা- উভয়ের ব্যবহার যোগ্য আবাসন রয়েছে। এই ক্যারিয়ারটি আইএনএস বিক্রামাদিত্যের পরিপূরক। এটি ভারতের একমাত্র অপারেশন ক্যারিয়ার।

দেশের নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, আত্মনির্ভর ভারত বা মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যেগের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দেশীয় এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার নির্মাণের সঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন এই যুদ্ধ জাহাজ পুরোপুরি দেশীয় পদ্ধতিতে আর দেশেই তৈরি হয়েছে।

আগেই ভারতীয় নৌবাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ জয়ে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল বিক্রান্তের পূর্বসূরী। সেই যুদ্ধের ৫০ বছর পর আবারও একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৈরি হয়েছে বিক্রান্ত। ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কোচি শিফইয়ার্ডে এই রণতরী তৈরি হয়েছে। এটি থেকে মিগসহ একাধিক যুদ্ধ বিমান ওঠা নামা করতে পারে।