জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেন, “অবিলম্বে বৈরিতা এবং হিংসা বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি আমরা।”

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তোলা প্রস্তাব নিয়ে ভোটে অংশ নিলো না ভারত। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী দেশগুলোর উত্থাপন করা ওই প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটিতে অংশ না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারী, শুক্রবার, রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত ওই প্রস্তাবের পক্ষে ১১টি ভোট পড়েছে। ভারত ছাড়া চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতও ভোটে অংশ নেয়নি। তবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ভেটো প্রয়োগ করায় প্রস্তাবটি পাস হয়নি।

তিরুমূর্তি বলেছেন, “ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে বৈরিতা এবং হিংসা বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি আমরা। আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেন সংকট সমাধানের পথ পাওয়া যেতে পারে।”

নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারতের পক্ষ থেকে আগেই ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে ‘ভারসাম্যের কূটনীতির’ পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে সেটারই প্রমাণ মিলেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী দেশগুলোর আনা প্রস্তাবে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার কড়া নিন্দা করা হয়েছে। ভারত পশ্চিমাদের সেই মস্কো বিরোধিতার উদ্যোগে যুক্ত হয়নি।

নিরাপত্তা পরিষদে তিরুমূর্তি বলেছেন, “রাশিয়া, ইউক্রেন ও ইউরোপের ওএসসিই (অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ)-ভুক্ত দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত গোষ্ঠীর আলোচনা হলে স্বাগত জানাবে ভারত।”

তিনি আরো বলেছেন, রাশিয়া, ইউক্রেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে নরম্যান্ডি পর্যায়ের আলোচনারও পক্ষে ভারত। বর্তমান পরিস্থিতিতে গঠনমূলক কূটনীতিই এখন একমাত্র পথ।

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “মানুষের জীবনের বিনিময়ে কখনও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়ে আসে না। এই আবহে কূটনৈতিক আলোচনার পথ বন্ধ হওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক। কিন্তু আমাদের কূটনীতির পথে ফিরতে হবে। সেই কারণে ভারত ভোটদান প্রক্রিয়ার থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

বৃহস্পতিবার পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ঘোষণার পরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত। তিরুমূর্তি বলেন, ‘‘দু’দিন আগে নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠক করেছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিল। আমরা দ্রুত উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছিলাম এবং পরিস্থিতি সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকরী এবং যুক্তিগ্রাহ্য কূটনীতির উপর জোর দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সাম্প্রতিক উদ্যোগে সাড়া মেলেনি।’’

খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক