ভারত প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে ডিজিটাল স্বাস্থ্য বিভাজন মেটানোর চেষ্টা করছে বলে জি২০ গ্রুপের বাকি সদস্যদের জানিয়েছে।
মহামারীর বিপদ এখন অতীত। বর্তমান সময়ে প্রয়োজন এক সমন্বিত ও সুদৃঢ় স্বাস্থ্য ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থার। রবিবার হায়দ্রাবাদে ভারতের সভাপতিত্বে জি-২০ দেশগুলির স্বাস্থ্য মন্ত্রীদের তৃতীয় কর্মী গোষ্ঠীর বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডঃ ভারতী প্রবীন পাওয়ার।

তিনি বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা ও সমন্বয়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী দেখিয়ে দিয়েছে, মহামারীর সময়ের পরিবর্তে শান্ত পরিস্থিতিতে অংশীদারিত্বের গুরুত্বের সুফলতার বিষয়টি। তাই প্রয়োজন এক নমনীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার, যেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সর্বাধিক অগ্রাধিকার পায়।

তিনি বলেন, জি-২০ সদস্য দেশগুলির মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে কার্যকর প্রভাব ও পরিণতি অর্জনে আস্থা, জ্ঞানের আদান-প্রদান ও পারস্পরিক সমন্বয় গড়ে তোলা প্রয়োজন।

ডঃ পাওয়ার নিরাপদ, কার্যকর ও গুণগত মানের চিকিৎসা পরিষেবার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্বে ভারত গুণগত মানের চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বজুড়ে এক সার্বিক সমন্বয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে।

এই লক্ষ্যে তিনি জি-২০ নেতৃত্বকে এমন এক অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান যা আন্তঃসরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে পরস্পরকে সাহায্য করবে। বৈঠকে ডঃ পাওয়ার বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংক্রান্ত ভারতের উদ্যোগ সম্পর্কেও প্রতিনিধিদের অবহিত করেন।

এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে চলতি প্রযুক্তির ব্যবহার ও এই সংক্রান্ত উদ্যোগগুলির মধ্যে সমন্বয়সাধনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। এটি কার্যকর হলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে যে ফারাক রয়েছে তা দূর হবে। সেই সঙ্গে বিশ্বের প্রতিটি নাগরিকের কাছে প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে যাবে।

এই বৈঠকে স্বাস্থ্য পরিষেবায় পরম্পরাগত ভারতীয় জ্ঞানের অবদানের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি বলেন, ভারতীয় পরম্পরাগত জ্ঞান পদ্ধতি সকলের কল্যাণে ও রোগের প্রতিকারে পরিচালিত হয়ে আসছে।

চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্বের এক অগ্রণী দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে শ্রী রেড্ডি বলেন, ভারতে সুলভে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য পরিষেবা পাওয়া যায়। আর এই কারণে ভারত চিকিৎসা পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভারত প্রথম ১০টি দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

আজকের বৈঠকে নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ডঃ ভি কে পল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ, ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের মহানির্দেশক ডঃ রাজীব বহল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক