ভারতীয় সেনা সদস্যদের সঙ্গে দশেরা উদযাপন করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে।
সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই, মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর), দশমীর দিন, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ “শস্ত্র পূজা” করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। চিনের সীমান্তের একেবারে গায়ে ভারতীয় সেনা সদস্যদের সঙ্গে দশেরা উদযাপন করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে।

অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতের সামরিক প্রস্তুতির বিস্তৃত পর্যালোচনা করেন সেনাপ্রধান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যে ‘অটল প্রতিশ্রুতি এবং অতুলনীয় সাহসের’ সঙ্গে সেনাকর্মীরা সীমান্ত পাহারা দেন, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

বুম-লা-সহ সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি পরিদর্শন করেন তারা। পরে রাজনাথ সিং বলেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই। পূর্ববর্তী মোদী সরকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদে ছিলেন রাজনাথ সিং। সেই সময় থেকেই তিনি দশমী বা দশেরার দিন ‘শস্ত্র পূজা’ করেন।

গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব লাদাখের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভারত এবং চিন সেনার অচলাবস্থা চলছে। একের পর এক কমান্ডার স্তরের বৈঠক হচ্ছে। তবে, এখনও দ্বন্দ্ব মেটেনি। বরং সম্প্রতি, অরুণাচল প্রদেশকে তাদের এলাকা বলে দাবি করে, মানচিত্র প্রকাশ করেছে চিন।

গত বছর ৯ ডিসেম্বর, তাওয়াং সেক্টরের ইয়াংটসেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চিন সেনা। এরই মধ্যে অরুণাচলে শস্ত্রপূজা করে বেজিংকেই বার্তা দিলেন রাজনাথ, এমনটাই মনে করছে সামরিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তাওয়াং-এর সামরিক ঘাঁটিতে ‘শস্ত্র পূজা’ করার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “দশেরা অশুভের পরাজয় এবং শুভের জয়কে চিহ্নিত করে।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এদিন তাওয়াং যুদ্ধের স্মৃতিসৌধও পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৬২ সালের চিন-ভারত যুদ্ধের শহিদ সেনানিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সেনাদের উদ্দেশে রাজনাথ বলেন, “যেভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে আপনারা সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। দেশের মানুষ আপনাদের নিয়ে গর্বিত। আপনাদের অদম্য মনোভাব, অটল প্রতিশ্রুতি এবং অতুলনীয় সাহসের জন্যই দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, দেশে তৈরি প্রতিরক্ষার সাজ-সরঞ্জামের মাধ্যমে দেশের সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য সমস্ত চেষ্টা করছে মোদী সরকার। আগে সামরিক বাহিনীকে উন্নত করতে অস্ত্রশস্ত্র আমদানির উপর নির্ভর করতে হত। কিন্তু আজ দেশেই অনেক বড়-বড় অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “বিদেশী সংস্থাগুলিকে তাদের প্রযুক্তি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য এবং দেশীয় শিল্পের সঙ্গে একযোগে ভারতে অস্ত্রশস্ত্র উত্পাদন করতে উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৪ সালে আমরা প্রায় ১০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করতাম। কিন্তু, আজ আমরা হাজার হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করছি।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক