নিরাপদ ও সুরক্ষিত সামুদ্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে যৌথ সহযোগিতার প্রচেষ্টা এই যৌথ সামুদ্রিক মহড়া।
ভিয়েতনাম কোস্ট গার্ডের জাহাজ সিএসবি ৮০০৫ যখন ২০ ডিসেম্বর ২০২৪-এ কেরালার কোচি থেকে বিদায় নিল, তখন এটি দুই দেশের কোস্ট গার্ড বাহিনীর মধ্যে বাড়তে থাকা সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত চিহ্নিত করল। এই সফরের চূড়ান্ত অংশ ছিল চার দিনের যৌথ সামুদ্রিক মহড়া ‘সহযোগ-হপ ট্যাক’, যা সামুদ্রিক নিরাপত্তার প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং পারস্পরিক সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
মহড়ার মূল উদ্দেশ্য
১. সামুদ্রিক নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি বাড়ানো।
২. অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমে সমন্বয় শক্তিশালী করা।
৩. তেল ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিবেশগত বিপর্যয়ে কার্যকর প্রতিক্রিয়া গড়ে তোলা।
৪. যৌথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান বিনিময় নিশ্চিত করা।
‘সহযোগ-হপ ট্যাক’ মহড়ার প্রধান দিকসমূহ:
১. অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান: সমুদ্রের দুর্গম পরিস্থিতিতে সমন্বিত উদ্ধার প্রচেষ্টা প্রদর্শন করা হয়েছে। এই মহড়ায় আইসিজি-এর হেলিকপ্টার ও বিমান তাদের অত্যাধুনিক দক্ষতা প্রদর্শন করে।
২. দূষণ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনী: তেল ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিবেশগত বিপর্যয় মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল নিয়ে যৌথ ড্রিল পরিচালনা করা হয়।
৩. পরিদর্শন, বোর্ডিং, অনুসন্ধান ও বাজেয়াপ্ত: অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত সন্দেহজনক জাহাজগুলো পরিদর্শনের জন্য যৌথ অভিযানের অনুশীলন করা হয়।
৪. অসমমিত হুমকি নিরসন: আধুনিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথভাবে হুমকি নিরসনের কৌশল প্রদর্শন করা হয়।
সফরের অন্যান্য উদ্যোগঃ
১. ক্রু বিনিময়: উভয় কোস্ট গার্ডের সদস্যরা একে অপরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন।
২. যৌথ প্রশিক্ষণ: যৌথ প্রশিক্ষণ সেশন দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।
৩. সামাজিক কার্যক্রম: ক্রুরা সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার ও একটি প্রীতি ভলিবল ম্যাচে অংশ নেন, যা সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে।
ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে এই যৌথ মহড়া এবং সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়ানোর একটি পদক্ষেপ।
ভারতীয় কোস্ট গার্ডের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে: ‘এই মহড়া দুই দেশের সামুদ্রিক পরিবেশে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। দক্ষতার বিনিময় এবং যৌথ অপারেশন শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত সামুদ্রিক অঞ্চলের একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করে।’
উত্তর-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় মহাসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই দেশের এই সহযোগিতা আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি ও ভিয়েতনামের আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি উভয় দেশকেই নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির পথে অগ্রসর করছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।