বিমসটেক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুসংহত এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তৃত করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে
ভারত ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে থাইল্যান্ডের আয়োজনে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ২৪তম বিমসটেক সিনিয়র অফিসিয়ালস মিটিংয়ে (এসওএম) অংশগ্রহণ করেছে। এই বৈঠক গত বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত এসওএম-এর পর থেকে অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করার একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করেছে।
ভারতের পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) পূর্ব বিভাগের সচিব জয়দীপ মজুমদার।
বিমসটেক অঞ্চলে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য যৌথ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের অভিজ্ঞতা ও কৌশল ভাগ করে নেয়।
আঞ্চলিক সংযোগের গুরুত্ব অনুধাবন করে, বিমসটেক ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এই পরিকল্পনা সড়ক, রেলপথ এবং সমুদ্রপথের অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে বিনিময় সহজতর করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসবাদ দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সমুদ্র নিরাপত্তায় সহযোগিতা জোরদারের ওপর আলোকপাত করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ এবং সাইবার নিরাপত্তা উন্নত করার বিষয়টিও অগ্রাধিকার পায়।
সংস্কৃতি এবং শিক্ষা বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আঞ্চলিক সংহতি বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। পর্যটন, একাডেমিক সহযোগিতা এবং যুবসম্পৃক্ততা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বাণিজ্য, প্রযুক্তি, জ্বালানি এবং কৃষি খাতে যৌথ উদ্যোগের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়।
অঞ্চলীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং কর্মসমূহের নতুন কাঠামো প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বহিঃসহযোগীদের সঙ্গে কাজ করার কাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়।
৬ষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনের প্রস্তুতি
আগামী ৬ষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সম্মেলনের এজেন্ডা, প্রত্যাশিত ফলাফল এবং আয়োজন সংক্রান্ত ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হয়।
ভারতীয় প্রতিনিধি দল বিমসটেকের প্রতি দেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং একটি সমৃদ্ধ ও সংযুক্ত অঞ্চলের লক্ষ্যে কাজ করার কথা পুনরায় জানায়। বিমসটেক সনদ গৃহীত হওয়ায় এটি এখন একটি প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় পেয়েছে, যা বহিঃসহযোগীদের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করেছে।
প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র নির্দিষ্ট খাতে নেতৃত্ব প্রদান করছে। যেমন, ভারত নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জ্বালানি খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত করতে কাজ চলছে, যা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে। ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব বিমসটেকের প্রতিটি উদ্যোগকে আরও কার্যকর করতে ভূমিকা রাখছে।
২৪তম বিমসটেক সিনিয়র অফিসিয়ালস মিটিং বিমসটেকের আঞ্চলিক সংহতি এবং উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ৬ষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতিতে এই অগ্রগতি একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে। বিমসটেকের মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।